আকাশ চন্দ্র পাপ্পু রংপুরঃ রংপুরের পীরগাছায় হেযবুত তওহীদ কর্তৃক এলাকাবাসীর উপর অতর্কিতভাবে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হেযবুত তওহীদকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় তাওহীদি জনতা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার পারুল ইউনিয়নের দেউতি বাজারে পারুল ইউনিয়ন যুব জামায়াতের সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় কয়েকশত জনতার উপস্থিতিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।
এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্যে মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন,হেযবুত তওহীদের ইসলামবিদ্বেষী কর্মকান্ড ও বিতর্কিত সমাবেশ বন্ধের জন্য আমরা সংঘর্ষের ঘটনার আগের দিনেই পীরগাছা থানার ওসি মহোদয় কে জানিয়েছিলাম। তিনি আমাদের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পুরো সংঘর্ষের ঘটনাটি প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই হয়েছে। আবার আমাদের সঙ্গে ছলচাতুরি করে নিরীহ জনতার নামে হেযবুত তওহীদের লোকের দেয়া মিথ্যা মামলা গ্রহণ করেছে। আমরা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হেযবুত তওহীদ কর্তৃক সাধারণ জনতার নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার চাই ও হেযবুত তওহীদের সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় দেখতে চাই। সরকারের কাছে দাবি করছি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কালো তালিকাভুক্ত হেযবুত তওহীদ নামক সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হোক।
ইসলামি আন্দোলনের রংপুর মহানগর নেতা হাফেজ মাওলানা মাসুদুর রহমান বলেন, এই হেযবুত তওহীদ মহানবী সাঃ কে নবী মানেন না। তারা পাঁচ ওয়াক্তের জায়গায় নারী পুরুষ একত্রে মিলে তিন ওয়াক্ত নামায পড়েন। আওয়ামী সরকারের এই দোসররা ইসলামের নামে ভ্রান্ত মতবাদ প্রচার করে ইসলামকে কলংকিত করা চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা নিজেদেরকে ইসলামিক দল পরিচয় দিলেও তাদের সঙ্গে আলেম ওলামাদের কোন সম্পর্ক নেই। অবিলম্বে এদের সমস্ত ইসলাম বিদ্বেষী কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে রাজপথে এদের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি আব্দুর রহমান ও
হাফেজ মাওলানা গোলাম মোস্তফা,
ইসলামী আন্দোলন আন্দোলন বাংলাদেশ রংপুর মহানগর নেতা হাফেজ মাওলানা মাসুদুর রহমান,
দেউতি জামে মসজিদের খতিব নুরুল আজম নওশাদ,
ইসলামী আন্দোলন রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মুফতি সালেহ আহমেদ মুহিত, পীরগাছার পারুল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইউসুফ খান,
গণ অধিকার পরিষদ রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম,পারুল ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুল্লাহ আল সাঈদ শামীমসহ অনেকে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ সিদাম এলাকায় হেযবুত তওহীদের ৪০/৫০ জন কর্মী একটি গোপন বৈঠক করছিলেন। বৈঠকের খবর পেয়ে এলাকাবাসী সেখানে গিয়ে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়। তার মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এঘটনায় ভুক্তভোগী তৌহিদি জনতার পক্ষে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০ জন অজ্ঞাত নামীয় আসামি করে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপর দিকে হেযবুত তওহীদের নেতা আব্দুল কুদ্দুস শামীম বাদী হয়ে ২৭ জনকে এজাহার নামীয় আসামীসহ ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।